রাজশাহীতে মাদ্রাসা ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন শিক্ষক
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
টাকা চুরির অপরাধে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের তুলসিপুর (সোদপুর) গ্রামে আল কারীম হিফ্জুল কুরআন মাদ্রাসার জুবাইর হোসেন (১১) নামে এক ছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়েছেন একই মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক মেজবা ওয়াদুদ শাহরিয়ার ডলার।
গত (১৪ জুন) মঙ্গলবার রাতে ছাত্র জুবাইর হোসেনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।পরে তার পরিবারের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এই ঘটনায় ছাত্রের পিতা জিল্লুর রহমান বাদি হয়ে বুধবার বিকেলে বাঘা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের তুলসিপুর (সোদপুর) গ্রামে আল কারীম হিফজুল কুরআন মাদরাসা ও ইসলামী কিন্ডারগার্টেন মক্তব শ্রেণির ছাত্র জুবায়ের হোসেনকে গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে ঐ মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে সে নিয়মিত লেখাপড়া করে যাচ্ছে। তবে মঙ্গলবার মাদ্রাসার তহবিল থেকে টাকা চুরি হয়। এতে ঐ ছাত্রকে সন্দেহ করে তল্লাশি করা হলে তার কাছে ২২০ টাকা পাওয়া যায়। মাদ্রাসার শিক্ষক এই ঘটনায় ছাত্রকে বেত দিয়ে পিটিয়ে আটকে রাখে।
পরে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে (১৫ জুন) বুধবার দুপুরে মাদ্রাসা থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা করেন। ছাত্রের পিতা জিল্লুর রহমান বাদি হয়ে বুধবার বিকেলে মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক মেজবা ওয়াদুদ শাহরিয়ার ডলারকে অভিযুক্ত করে বাঘা থানায় একটি অলিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ছাত্রের বাবা জিল্লুর রহমান বলেন, আমার ছেলে মনিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ত। দীর্ঘদিন করোনার কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় মাদরাসায় ভর্তি করি। আমার ছেলে একজন সৎ ও সহজ সরল। তাকে কোন কারণ ছাড়াই চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে আটকে রাখে মাদ্রাসার শিক্ষক। পরে তাকে উদ্ধার করে মেডিকেলে ভর্তি করি।
এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছেলের পাশে বসে মা শরিফা বেগম ছেলের অবস্থা দেখে শুধু কেঁদেই যাচ্ছেন। তিনি কোন কথা বলতে পারছিলনা। সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলতে গেলে, তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে, তুলসিপুর (সোদপুর) গ্রামে আল কারীম হিফজুল কুরআন মাদ্রাসা ও ইসলামী কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক মেজবাহ ওয়াদুদ শাহরিয়ার ডলার বলেন, মাদ্রাসার পাশে সেন্টুর মুদি দোকানে এর আগে চুরি হয়। এতে সন্দেহ করা হয় ছাত্রকে। এছাড়া মাদ্রাসার ছাত্রদের মাঝে মধ্যে টাকা চুরি হয়। বিষয়টি নিয়ে ছাত্র জুবায়ের হোসেনকে সন্দেহ করে তার ব্যাগ তল্লাশি করা হলে ২২০ টাকা পাওয়া যায়। তারপর তাকে শাসন করা হয়েছে।
এই বিষয়ে আরও জানতে চাইলে, বাঘা থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক তৈয়ব আলী বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।