বগুড়ায় মিলল ধর্ষণের শিকার হয়ে স্কুলছাত্রীর জন্ম দেয়া সেই সন্তানের পিতৃপরিচয়
বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ায় তৃতীয় দফায় ডিএনএ টেস্টে ধর্ষণের শিকার হয়ে স্কুলছাত্রীর জন্ম দেয়া সেই সন্তানের পিতৃপরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে। ডিএএন পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী রাকিব হোসেন এক পরিবহন শ্রমিক ওই সন্তানের বাবা।
রাকিব হোসেন ভান্ডারবাড়ি ইউপির রঘুনাথপুর গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক করে। মামলায় অভিযুক্ত আসামী রাকিব ও বকুল বগুড়া কারাগারে আটক রয়েছে।
শনিবার ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলাটি প্রায় দুই বছর ধরে তদন্ত শেষে বগুড়া আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। মামলায় রাকিব হোসেন ও একই এলাকার অফফের আলীর ছেলে বকুল হোসেনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ডিএনএন টেস্ট ও তদন্তে দোষী সাব্যস্ত না হওয়ায় এ মামলা থেকে স্কুলছাত্রীর নানা রশিদ মন্ডলকে অব্যাহিত দেয়া হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী কৈয়াগাড়ি গ্রামে নানা রশিদ মন্ডলের বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতো। পার্শ্ববর্তী রঘুনাথপুর গ্রামের অফফের আলীর ছেলে বকুল হোসেনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল বিকেলে বকুল মেয়েটির ঘরে ঢুকে ধর্ষণের সময় ধরে ফেলে নানা। ঘটনাটি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে একই সময় নানা রশিদ মন্ডলও নাতনিকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হলে তার বাবা বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মেয়েটির নানা রশিদ মন্ডল ও তার নাতি বকুল হোসেনকে আসামি করা হয়। এ অবস্থায় ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়।
এদিকে আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশ সন্তানসহ স্কুলছাত্রীকে রাজশাহী শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে রাখেন। এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারী রশিদ মন্ডল ও বকুল হোসেনকে গ্রেফতার করে বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া নবজাতকের জন্মদাতার পরিচয় সনাক্ত করতে রশিদ ও বকুলের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। কিন্ত তাদের ডিএনএ পরীক্ষায় সন্তানের জন্মদাতার পরিচয় মেলেনি।
পরবর্তীতে আদালতে হাজির করা হলে স্কুলছাত্রী পুনরায় রাকিব হোসেনের নাম প্রকাশ করেন। গত ৭ আগস্ট নওগাঁ শহরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে রাকিববে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের আদেশে ৩ সেপ্টেম্বর ওই স্কুলছাত্রী ও তার পুত্রসন্তান এবং রাকিবকে ঢাকা সিআইডির সদর দফতরে ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে পরীক্ষায় সন্তানের জন্মদাতার পরিচয় মিলেছে বলে জানা যায়।