সংবাদ সারাদেশ

পূর্ণ হলো সিনহা হত্যার দুই বছর, দ্রুত রায় কার্যকর চায় পরিবার

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ

পূর্ণ হলো অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের দুই বছর । ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত ৯টায় কক্সবাজারের টেকনাফে মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ দুই জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে ছয় আসামিকে। সর্বোচ্চ সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স এখন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রয়েছে।

এই ব্যাপারে সিনহার মা নাসিমা আক্তার বলেন আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের দুই বছর আজ। তিনি আরও বলেন, ‘যারা আমার ছেলেকে হত্যা করে আমার বুক খালি করেছে সেই মানুষ নামধারী কীটদের দ্রুত যেন ফাঁসি কার্যকর হয় এটিই আমার প্রত্যাশা। আমি আশায় বুক বেঁধে আছি সেই দিনের জন্য যেদিন এদের ফাঁসি হবে। তবেই কিছুটা হলেও শান্তি পাব।

ডেথ রেফারেন্স শাখা সূত্র জানিয়েছে, বিচারিক আদালত থেকে ডেথ রেফারেন্স আমাদের এখানে এসেছে রায় ঘোষণার এক সপ্তাহ পর। আমরা মামলার নথি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। এরপর পেপারবুক প্রস্তুত করার জন্য সরকারি ছাপাখানায় পাঠানো হবে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার নাকি সালের ক্রমানুযায়ী শুনানি হবে-সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। যদি কোনো সিদ্ধান্ত হয় তাহলে তা ডেথ রেফারেন্স শাখাকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হবে। তখন ডেথ রেফারেন্স শাখা সেভাবেই মামলার পেপারবুক প্রস্তুতে পদক্ষেপ নেবে।

মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের দেড় বছরের মধ্যে মামলার বিচারের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ দুই আসামি ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। যাবজ্জীবন দণ্ড দেয় ছয় আসামিকে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেছেন।

এদিকে, সিনহা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসার পর তা যাচাই-বাছাই করছে হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা। মামলার সব নথি ক্রমানুসারে সাজিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে পেপারবুকের জন্য। আর এই পেপারবুক প্রস্তুত করা হবে সরকারি ছাপাখানা বিজি প্রেসে। পেপারবুক প্রস্তুত হলেই মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

পেপারবুক প্রস্তুত হলেই ডেথ রেফারেন্স ও আসামির আপিল শুনানি হয়ে থাকে সালের ক্রমানুযায়ী। উচ্চ আদালতে মামলা জটের কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি। বর্তমানে হাইকোর্টে ২০১৭ সালে অধস্তন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি চলছে। সেই হিসাবে সালের ক্রমানুযায়ী এই হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য ২০২৭ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বিচার প্রার্থীদেরকে।

তবে এর আগেও শুনানি করা সম্ভব যদি রাষ্ট্র বা সুপ্রিম কোর্ট অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডেথ রেফারেন্স শুনানির উদ্যোগ নেয়। সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট বা বিজি প্রেস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে থাকে।তবে পেপারবুক প্রস্তুত হলেই অধস্তন আদালতের রায় ঘোষণার দুই বছরের মধ্যেই ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি সম্ভব হতে পারে বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

এই ধরণের সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button