এবার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করলেন রাজশাহীর কাটাখালীর আলোচিত মেয়র আব্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে এবার আলোচিত আরেক মেয়র কটুক্তি করেছেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করার রেশ কাটতে না কাটতেই জাতির জনকের ম্যুরাল বসানো নিয়ে এবার কটুক্তি করলেন রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী।
তিনি এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত মেয়র। এছাড়া তিনি সম্প্রতি ঘোষিত পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও জেলা কমিটির সদস্য। দেশে মেয়র বিতর্ক যেন থামছেই না। এই ঘটনায় রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে সমালোচনার ঝড়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল বসানো নিয়ে মেয়র আব্বাস আলীর কটুক্তি করা ফাঁস হওয়া অডিওটি এখন ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ২১ নভেম্বর রোববার রাত থেকে অডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পাড়ে রাজশাহী সহ পুরোদেশে। ইসলামের দৃষ্টিতে পাপ এমন মন্তব্য মেয়র আব্বাসের।
সে জন্য রাজশাহী সিটি গেটে বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল না বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন এই মেয়র; যা জীবন দিয়ে হলেও প্রতিহত করার ঘোষণাও দেন তিনি। তার এমন বক্তব্যে রাজশাহীজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে মানুষের মাঝে। যদিও নিজে বাঁচতে পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন মেয়র আব্বাস। মেয়র আব্বাসের ফাঁস হওয়া ১মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই অডিওটিতে বলেছেন, সিটি গেট আমার অংশে। একটি ফার্মকে দিয়েছে তারা বিদেশী স্টাইলে সাজিয়ে দিবে; ফুটপাত, সাইকেল লেন টোটাল আমার অংশটা। কিন্তু একটু থেমে গছি গেটটা নিয়ে। একটু চেঞ্জ করতে হচ্ছে যে মুর্যালটা দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর সেটা ইসলামী শরীয়ত মতে সঠিক নয়। এ জন্য আমি ওটা রাখবোনা, সব করবো তবে শেষ মাথাতে ওটা (মুর্যাল) হবে।
মেয়র আব্বাস আলী আরো বলছেন, ‘‘আমি দেখতে পাচ্ছি আমাকে যেভাবে বুঝাইছে আমি দেখতে পাচ্ছি যে মুর্যালটা ঠিক হবে না দিলে; আমার পাপ হবে; তো কেন দিব। দিব না। আমিতো কানা না, যেভাবে বুঝাইতেছে তাতে আমার মনে হয়েছে মুর্যালটা হলে আমার ভুল করা হবে। এ খবরটা যদি যায় তাহলে আমার রাজনীতির বারোটা বাজবে; এই মুর্যাল দিত চেয়ে দিচ্ছে না। তাহলে বঙ্গবন্ধুকে খুশি করতে গিয়ে আল্লাহকে নারাজ করবো নাকি? এ জন্য কিছু করার নাই। মানুষেক সন্তস্ট করতে গিয়ে আল্লাহকে অসন্তস্ট করা যাবে না।’’
তবে ফাঁস হওয়া অডিওটি তার নয় বলে অস্বীকার করে মেয়র আব্বাস আলী বলেন, ‘মুর্যাল করা যাবে না, মুর্যাল করলে পাপ হবে, এ ধরণের কথা সঙ্গে কারও আমার হয়নি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করার মতো আমার সাহস কখনও ছিলো না। অডিওতে যে ভয়েস শোনা যাচ্ছে তা আপনার সাথে হুবুহু মিল রয়েছে এমন কথা বলা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর থেকে আর কল রিসিভ করেছেন না। এই বিষয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, পৌর মেয়র আব্বাসের বক্তব্য লোকমুখে শুনেছি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করা খুব অন্যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করলে তার আওয়ামী লীগ করার অধিকার থাকে না। আমরা এর তদন্ত করবো। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যদি কোন কটুক্তি করে থাকে তার বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য,সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর গত ৩ অক্টোবর তাকে কারণ দর্শানের নোটিশ দেয়া হয়। আর তাকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয় গত ১৯ নভেম্বর। স্থানিয় সুত্র মতে কাটাখালীর মেয়র আব্বাসের পরিবার পুর্বে থেকেই বি এন পির সাথে সম্পৃক্ত।
সরকারি রাস্তা দখল করে মার্কেট পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন সহ নানা অভিযোগ রয়েছে এই বিতর্কিত মেয়রের বিরুদ্ধে। কাটাখালীর দেওয়ান পাড়া মোড় থেকে পদ্মা নদী পর্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ রাস্তাটি বালু উত্তোলনের কারনে চলাচলের অন উপযোগী হয়ে পড়ে আর তখনি সরকারি অর্থ বিনষ্ট করে পুর্ন সংস্কারের নাটক হয় প্রতিবছর এই নাটের গুরু হিসেবে মেয়র আব্বাসকেই চিহ্নিত করছে স্থানীয়রা।
মেয়র আব্বাসের ছোট ভাই সহ মেয়র নিজেই আলোচিত পৃথক হত্যামামলার আসামি সেই মামলায় তার ভাই সাজা ভোগ করলেও সেখান থেকে আব্বাস আলী আইনের ফাঁকে জামিনে আসেন।