রাজশাহী রামেক হাসপাতালে গৃহবধূর মরদেহ ফেলে পালিয়েছে শ্বশুর বাড়ির লোকেরা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজশাহীতে মাহজুবা খাতুন আখি নামের এক গৃহবধূর মরদেহ রামেক হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে গেছে তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২ টার সময় রামেক হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। এই তথ্য নিশ্চিৎ করেন কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ বছর আগে কাশিয়াডাঙ্গা হাড়ুপুরের আরশাদ আলীর মেয়ে মাহজুবা খাতুন আখির বিয়ে হয় কাশিয়াডাঙ্গা কাঠালবাড়িয়া সজিবরের ছেলে আতিকুল ইসলাম টনির সাথে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে তার স্বামী টনি এবং শ্বশুর, শ্বাশুড়ি আখিকে বিভিন্ন ভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন। গতকাল সোমবার (১৫ মে) রাত ৩ টার সময় পলি বেগম নামের এক প্রতিবেশী নারী হটাৎ গৃহবধূ আখির পিতা আরশাদ আলীর বাড়িতে গিয়ে খবর দেই তার মেয়ে আখি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেছে তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। খবর পেয়ে রাতে রামেক হাসপাতালে গিয়ে আরশাদ দেখেন তার মেয়ে মৃত অবস্থায় রামেক হাসপাতালের ট্রলির উপরে রয়েছে। গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় রেখে তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পালিয়ে গেছে বলে জানতে পারেন তিনি। পরে গৃহবধূর মরদেহ রামেক হাসপাতালে মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে গৃহবধূর মরদেহ হাড়ুপুর গোরস্থানে দাফন কাজ সম্পুর্ণ করে তার পরিবার।
নিহত গৃহবধূর পিতা আরশাদ আলী বলেন, গতকাল সোমবার (১৫ মে) রাত ১২ টা থেকে রাত আড়াই টার মধ্যে আমার মেয়েকে নির্যাতন করে তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। হত্যা কান্ড ধামাচাপা দিতে তার স্বামী টনি এবং শ্বশুর সজিবর, শ্বাশুড়ি রাশিদা, কাঠালবাড়িয়া এলাকার কামরুল ইসলাম কামু সহ অজ্ঞাত ২ থেকে ৩ জন আত্মহত্যার নাটোক সাজিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়েকে যদি হত্যা না করা হতো তাহলে রাতে আমার মেয়ের আত্মহত্যার খবর আমাকে জানাতেন তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। তাছাড়া রাতে শুধু তার চাচাতো শ্বাশুড়ি নাসিমা এবং তার ননদের স্বামী কামরুল রামেক হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তার আখিকে মৃত ঘোষনা করার পরে তারা পালিয়ে যেতো না। আমার মেয়েকে তার স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি সহ অন্যানদের সহায়তাই পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার মেয়ের হত্যা কারিদের ফাঁসি চাই আমি।
এই বিষয়ে আরএমপি কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ধারনা করেছে গৃহবধূর শ্বশুর বাড়ির লোকদের প্ররোচনায় আত্মহত্যা করেছে গৃহবধূ আখি। এই জন্য আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে এজাহার নেয়া হয়েছে। নিহত আখির পিতা থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২ থেকে ৩ জনের বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার সকালে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে না আত্মহত্যায় প্ররোচনা করা হয়েছে। যদি হত্যা কান্ড প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় তাহলে হত্যা মামলা হিসাবে মামলা হবে আসামীদের বিরুদ্ধে।
ওসি বলেন, পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে। আশা করি দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।